বেতন বৈষম্য

বিংশ শতকে লিঙ্গ ও বেতন বৈষম্য বন্ধ করার দিকে অগ্রগতি হলেও একুশ শতকে এসে তা ধীর হয়ে যায়। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুসারে, ১৯৮২ সালে পুরুষের প্রতি ডলার উপার্জনের বিপরীতে নারীরা পেতেন ৬৫ সেন্ট করে; ২০০২ সালের মধ্যে এই সংখ্যা অবশ্য ৮০ সেন্টে উন্নিত হয়।

তবে ২০২৩ সালে নারীরা সারা বছর পূর্ণকালীন চাকরি করেও পুরুষের প্রতি ডলারের বিপরীতে ৮৪ সেন্ট করে উপার্জন করেছে। অন্যদিকে কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা প্রতিটি শ্বেতাঙ্গ পুরুষের প্রতি ডলারের বিপরীতে ৬৯ সেন্ট উপার্জন করেছে। মার্কিন শ্রম বিভাগের নতুন রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়। 

শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য

ন্যাশনাল সেন্টার ফর এডুকেশন স্টাডিজের তথ্য অনুসারে, ১৯৮১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিউ রিসার্চ সেন্টার জানায়, ২০১৯ সালে মহামারির পরে এই প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে নারীরা এখন কলেজ-শিক্ষিত কর্মশক্তির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ।

গর্ভপাত অধিকার

কমলা হ্যারিস ১৯৬৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ৯ বছর পরে রো বনাম ওয়েড মামলায় গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে ফেডারেল সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। 

২০২২ সালের জুনে সুপ্রিম কোর্ট সেই সুরক্ষা বাতিল করে, যা এখন অর্ধেকেরও বেশি রাজ্যে গর্ভপাতের অধিকার সীমিত করে দিয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশ্বের চারটি দেশের মধ্যে একটি, যারা গর্ভপাতের অধিকার সীমিত করেছে।

সিইও এবং বোর্ডরুমে নারীর অংশগ্রহণ

২০২৪ সালে ফরচুন ৫০০ কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে নারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১১ শতাংশ এবং বোর্ড সদস্যদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ছিল ৩০ শতাংশ। এছাড়া এস অ্যান্ড পি ৫০০ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে ৩৪ শতাংশ নারী রয়েছেন। যা ২০১৪ সালের ১৯ শতাংশ থেকে বেড়েছে। 

২০২৩ সালের ম্যাকিন্সি গবেষণায় দেখা গেছে, ৩০ শতাংশ বা তার বেশি নারীর নেতৃত্বে থাকা কোম্পানিগুলো নারী নেতৃত্বহীন কোম্পানির তুলনায় বেশি সফলতা অর্জন করেছে।

মাতৃমৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের মাতৃমৃত্যুর হার অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে কমনওয়েলথ ফান্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮০ শতাংশ মাতৃমৃত্যুর ঘটনা প্রতিরোধযোগ্য। তবে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের গর্ভধারণজনিত কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি শ্বেতাঙ্গ নারীদের তুলনায় তিনগুণ বেশি। যা মূলত দীর্ঘস্থায়ী রোগ, কাঠামোগত বর্ণবাদ এবং মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবার অভাবের জন্য দায়ী।

সিডিসি এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বৈষম্য এবং কাঠামোগত বর্ণবাদের কারণে এই সমস্যাটি আরও জটিল হয়েছে।

পরিশেষে বলা হয় যে, কমলা হ্যারিসের পরাজয় যুক্তরাষ্ট্রে নারী নেতৃত্বের সুযোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী সংকটের ইঙ্গিত দেয়। যেখানে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জগুলো নারীদের পথে বাধা হিসেবে কাজ করে চলেছে। সূত্র: রয়টার্স

" /> দৈনিক নতুন আশা
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
logo
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

আরও পড়ুন